মৃত্যুর আগে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দিতে চেয়েছিলেন লেখক, গবেষক বদরুদ্দীন উমর। এ বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি তদন্ত কর্মকর্তার কাছে জবানবন্দিও দিয়েছিলেন তিনি। রেকর্ড করা হয় ভিডিও জবানবন্দিও। এতদিন তার সুস্থতার অপেক্ষায় ছিল প্রসিকিউশন।
তবে রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) না ফেরার দেশে চলে গেছেন তিনি। এ অবস্থায় প্রসিকিউশন বলছে, তার জবানবন্দি ট্রাইব্যুনালে গ্রহণ করার আবেদন করা হবে কি না সে সিদ্ধান্ত নেবেন চিফ প্রসিকিউটর।
তদন্ত কর্মকর্তার কাছে ৬ পৃষ্ঠার জবানবন্দিতে শেখ হাসিনার দুঃশাসনের নানা চিত্র তুলে ধরেছিলেন বদরুদ্দীন উমর। বলেছিলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর আওয়ামী লীগ শুধু ক্ষমতা থেকেই বিতাড়িত হয়নি, মানুষের বিশ্বাস থেকেও বিতাড়িত হয়েছে। ভারতের সহায়তায় দেশে অন্তর্ঘাতমূলক তৎপরতা চালানোর চেষ্টা করলেও রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগের পুনরুত্থান অসম্ভব বলেও ভবিষ্যদ্বাণী করে গেছেন তিনি।
জুলাই গণহত্যা চালানো শেখ হাসিনার মামলায় দুই নম্বর সাক্ষী ছিলেন বামপন্থি এ রাজনীতিক, লেখক ও গবেষক।
মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও সাম্প্রদায়িক বয়ানের আড়ালে কর্তৃত্ববাদ ও লুটপাট, শেখ হাসিনা শাসনের অন্যতম বৈশিষ্ট্য ছিল বলে জবানবন্দিতে উল্লেখ করেন বদরুদ্দীন উমর। তার মতে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে পারিবারিক সম্পত্তি বানানো হয়েছিল। রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণে দুর্নীতিকে সাংগঠনিক নীতি হিসেবে দাঁড় করানো হয়েছিল বলেও জানিয়েছেন তিনি।
জবানবন্দিতে তিনি আরও বলেন, ভারতের স্বার্থরক্ষায় নিয়োজিত ছিলেন শেখ হাসিনা। তার শাসন ব্যবস্থা ছিল ভারতের নীলকশায় নির্মিত। আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার প্রশ্নে জবানবন্দিতে বদরুদ্দীন উমর বলে গেছেন, দলটির কার্যক্রম দেশের রাজনীতি, অর্থনীতি ও সংস্কৃতিবিরোধী।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামিম বলেন, তদন্ত কর্মকর্তার কাছে দেয়া জবানবন্দিকে সাক্ষ্য হিসেবে গ্রহণে ট্রাইব্যুনালে আবেদন করা হবে কি না সে সিদ্ধান্ত নেবেন চিফ প্রসিকিউটর।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে তদন্ত কর্মকর্তার কাছে দেয়া জবানবন্দিকে অতীতে সাক্ষ্য হিসেবে গ্রহণের নজির রয়েছে বলেও জানান তিনি।
Leave a Reply