অভ্যুত্থানের এক বছর: সাবেক মন্ত্রী-এমপিসহ কারাগারে ১৬০ ‘ভিআইপি’

চব্বিশের জুলাই-অগাস্টের তুমুল গণআন্দোলনে ব্যাপক সংঘাত, সহিংসতা আর প্রাণহানির মধ্যে দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের টানা দেড় দশকের শাসনের অবসানের পর পঞ্জিকার পাতায় ফের জুলাই এসেছে।

এ সময়ের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘাতের দিনগুলোর নানা ঘটনায় করা মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন সাবেক মন্ত্রী-এমপিসহ দেড়শর বেশি প্রভাবশালী ব্যক্তি।

তাদের বিরুদ্ধে জুলাই আন্দোলনে হত্যা, হত্যাচেষ্টা, হামলার নির্দেশ ও জড়িত থাকার অভিযোগে দেশজুড়ে সহস্রাধিক মামলা হয়েছে। কেবল ঢাকাতেই আন্দোলনকেন্দ্রিক মামলা হয়েছে ৬৬৮টি।

এর বাইরে দুর্নীতি, অনিয়ম, অর্থপাচার, অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনেও (দুদক) অনেকের বিরুদ্ধে অভিযোগ ও মামলা হয়েছে। দুদকের আবেদনে আসামিদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি ফ্ল্যাট-প্লট, সম্পদ ও ব্যাংক হিসাব জব্দের আদেশ দিয়েছে আদালত।

বেশিরভাগ মামলার আসামি সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা, সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ অনেকেই এখন নাগালের বাইরে। শেখ হাসিনা অবস্থান করছেন ভারতে। অন্য নেতাদের অনেকেরই বিদেশে থাকার খবর চাউর হয়েছে বিভিন্ন সময়ে।

তাদের বিরুদ্ধে জুলাই অভ্যুত্থানে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ২৭টি মামলা হয়েছে। শেখ হাসিনাসহ ২০৬ জনকে মামলাগুলোতে আসামি করা হয়েছে; গ্রেপ্তার হয়েছেন ৭৩ জন। এখন পর্যন্ত চারটি মামলায় ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে। এর মধ্যে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে করা মামলা রয়েছে। বাকি তিনটি রাজধানীর চানখাঁরপুল এলাকায় ছয়জনকে গুলি করে হত্যা, রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যার ঘটনায় এবং আশুলিয়ায় ছয়জনকে হত্যা ও লাশ পোড়ানোর ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলা। ২০২৪ সালের ৫ অগাস্ট সরকার পতনের পর ঢাকাতেই ৬৬৮টি মামলা হওয়ার তথ্য দিয়েছেন ডিএমপি মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান।

তিনি বলেন, “আসামিও অনেকে। তবে মামলার ঘটনার সঙ্গে যাদের সম্পৃক্ততা পাওয়া যাচ্ছে, তদন্ত কর্মকর্তারা তাদের গ্রেপ্তার করছেন।”

আর কারা অধিদপ্তরের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি উন্নয়ন ও গণমাধ্যম) জান্নাত-উল ফরহাদ বর্তমানে দেশের বিভিন্ন কারাগারে ১৬০ জন ‘ভিআইপি আসামি’ থাকার তথ্য দিয়েছেন, যারা ‘ডিভিশন’ সুবিধা পাচ্ছেন।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডকমকে তিনি বলেন, “তাদের মধ্যে ৭৫ জন কেরাণীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার ও কাশিমপুর কারাগারে রয়েছেন। বাকিরা বিভিন্ন কারাগারে রয়েছেন। নিরাপত্তার স্বার্থে কে কোথায় তা বলা যাচ্ছে না।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *