হতাহতের সংখ্যা গোপন করার ‘প্রয়োজন সরকারের নেই’: প্রেস সচিব

মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে জঙ্গি বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় হতাহতের সংখ্যা গোপন করার কোনো ‘প্রয়োজন বা অভিপ্রায় সরকারের নেই’ বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে বাংলাদেশে হতাহতের সংখ্যা ‘গোপন রাখা অসম্ভব’ বলেও মনে করেন তিনি। দুই দশকের বেশি সময় ধরে মাঠের সাংবাদিকতার অভিজ্ঞতা থেকে এই ধারণা তিনি পোষণ করেন বলে জানিয়েছেন।

দেশের ইতিহাসে স্মরণকালের ভয়াবহ এই বিমান দুর্ঘটনার পর নিহত-আহতের সঠিক তথ্য প্রকাশের দাবি ওঠে বিভিন্ন মহলে। এই দাবিতে মঙ্গলবার মাইলস্টোনে দিনভর বিক্ষোভে নামে শিক্ষার্থীরা। তাদের ক্ষোভের মুখে নয় ঘণ্টা কলেজে আটকা পড়ে থাকতে হয় আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, শিক্ষা উপদেষ্টা সি আর আবরার এবং শফিকুল আলমকে। নয় ঘণ্টা পর পুলিশি পাহারায় সেখান থেকে বের হতে পারেন তারা।

এছাড়া সোশাল মিডিয়াতেও নিহত-আহতের তথ্য প্রকাশে ‘স্বচ্ছতার অভাব আছে’ জানিয়েছে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেকে, যা তা ‘অপপ্রচার’ বলে বিবৃতি দিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়।

এই পরিস্থিতিতে বুধবার সকালে ফেইসবুকে শফিকুল আলম লিখেছেন, ”স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট হাসপাতালগুলো থেকে নিয়মিত তথ্য প্রদান করছে এবং সেনাবাহিনীও এ প্রক্রিয়ায় সহযোগিতা করছে। আমি জোর দিয়ে বলতে চাই, সরকারের পক্ষ থেকে হতাহতের সংখ্যা গোপন করার কোনো প্রয়োজনে বা অভিপ্রায়ে নেই।”

মাইলস্টোন পরিদর্শনের অভিজ্ঞতা প্রেস সচিব তুলে ধরেছেন তার পোস্টে।

শফিকুল আলম লিখেছেন, “আপনাদের প্রার্থনা ও সমর্থনের জন্য ধন্যবাদ। আমরা গতকাল মাইলস্টোন কলেজে গিয়েছিলাম শোকাহত পরিবারগুলোর সঙ্গে দেখা করতে এবং সেই শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলতে, যারা এখনও ট্রাজেডির মানসিক ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে পারেননি। চারপাশের পরিবেশ ছিল শোক ও ক্ষোভে ভারি। অনেক শিক্ষার্থী তাদের প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা বলেছেন এবং শেয়ার মৃত্যুর সংখ্যা নিয়ে বিভিন্ন মাধ্যমের ভিন্ন ভিন্ন তথ্য প্রকাশ নিয়ে অসন্তোষ জানিয়েছেন।

”আমরা গতকাল টানা নয় ঘণ্টা কলেজে অবস্থান করেছি। চাইলে আগেই ফিরে আসা যেত, কিন্তু উপদেষ্টারা বলপ্রয়োগের আশ্রয় না নিয়ে শান্তিপূর্ণ সমাধান নিশ্চিত করতেই সেখানে ছিলেন। প্রয়োজনে তারা আরও দীর্ঘ সময় থাকতেও প্রস্তুত ছিলেন। যখন পরিস্থিতি অনুকূল হয়েছে, আমরা কেবল তখনই বিদায় নিয়েছি।”

কর্মজীবনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে শফিকুল বলেন, ”২০০২ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত বহু বড় দুর্যোগ নিয়ে কাজ করার অভিজ্ঞতা থেকে আমি বলতে পারি, বাংলাদেশে হতাহতের প্রকৃত সংখ্যা গোপন রাখা কার্যত অসম্ভব।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *