প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন বলেছেন, আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আইনের শাসনের একটি উদাহরণ সৃষ্টি করতে চায় নির্বাচন কমিশন। তিনি বলেন, “আসুন, একটা উদাহরণ সৃষ্টি করি এই দেশে যে আইনের শাসন কাকে বলে—আমরা এই ইলেকশনে সেটা দেখাতে চাই। তাতে যা হওয়ার হবে।”
শনিবার সকালে চট্টগ্রাম নগরের আসকার দিঘি এলাকার আঞ্চলিক লোকপ্রশাসন প্রশিক্ষণকেন্দ্রে অনুষ্ঠিত এক কর্মশালায় ভোট গ্রহণকারী কর্মকর্তাদের উদ্দেশে এ কথা বলেন সিইসি।
‘নির্বাচনপ্রক্রিয়ায় ভোট গ্রহণকারী কর্মকর্তাদের দায়িত্ব পালনে চ্যালেঞ্জসমূহ নিরূপণ ও উত্তরণ’ শীর্ষক ওই কর্মশালার আয়োজন করে সিবিটিইপি প্রকল্প—নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় আইসিটি ব্যবহারে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সক্ষমতা বৃদ্ধির অংশ হিসেবে।
সিইসি বলেন, “যেদিন নির্বাচন হবে, সেদিন মনে রাখবেন, আপনি হচ্ছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার। আইনগতভাবে সর্বময় ক্ষমতা আপনাদের দেওয়া আছে। যদি গোলমাল হয়, তাহলে ভোটকেন্দ্র বন্ধ করে দেবেন—একটা, দুইটা, দরকার হলে তিনটা। প্রয়োজনে পুরো সংসদীয় আসন বাতিল করেও দেবেন।”
তিনি আরও যোগ করেন, “আমরা সহজে ছাড়ার পাত্র নই। সহজে ছাড়ব না। আপনাদের পেছনে আমরা আছি। নির্বাচন কমিশন ফুল সাপোর্ট দেবে।”
‘ক্ষমতা ব্যবহার না করলে সেটাও অপরাধ’
নির্বাচনের আবহ শুরু হয়েছে উল্লেখ করে সিইসি বলেন, “সবাই মিলে একটি সুন্দর নির্বাচন করতে হবে। রিটার্নিং কর্মকর্তা ও প্রিসাইডিং কর্মকর্তাদের ক্ষমতায়িত করা হচ্ছে। কিন্তু সেই ক্ষমতা ব্যবহার করাটাও জরুরি। ক্ষমতা ব্যবহার না করলে সেটাও অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে।”
তিনি বলেন, “যতক্ষণ আইন ও বিধি অনুযায়ী কাজ করবেন, নির্বাচন কমিশন আপনাদের পাশে থাকবে।”
নিরাপত্তা এখন বড় চ্যালেঞ্জ
নির্বাচনের চ্যালেঞ্জ নিয়ে সিইসি বলেন, “প্রশাসনিক, আইনগত, প্রযুক্তিগতসহ নানা চ্যালেঞ্জ থাকলেও নিরাপত্তা এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটি বিশাল আকার ধারণ করেছে এবং সবাই এতে দুশ্চিন্তায় আছেন।”
‘জাতীয় নির্বাচন জাতীয়ভাবেই করতে হবে’
জাতীয় নির্বাচন শুধু নির্বাচন কমিশনের একার দায়িত্ব নয় উল্লেখ করে সিইসি বলেন, “এটি জাতীয় দায়িত্ব। প্রশাসন, পুলিশসহ সবাই মিলে করতে হবে। সমন্বয় ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। নির্বাচন কমিশন সচিবালয় থেকে উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত ইমার্জেন্সি সেল থাকবে।”
‘শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ জরুরি’
প্রিসাইডিং কর্মকর্তাদের মধ্যে অধিকাংশই শিক্ষক জানিয়ে সিইসি বলেন, “তাঁদের অনেকেই ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্টে অভ্যস্ত নন। তাই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে প্রস্তুত করতে হবে। পুলিশের মধ্যেও একই ধরনের ঘাটতি রয়েছে, কারণ গত ১৫ বছর ধরে ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্টে তাদের সরাসরি নিয়োজিত করা হয়নি।”
কর্মশালায় বিশেষ অতিথি ছিলেন নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার, নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব কে এম আলী নেওয়াজ, চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো. জিয়াউদ্দীন, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি মো. আহসান হাবীব, এবং ইউএনডিপি বাংলাদেশের সহকারী আবাসিক প্রতিনিধি আনোয়ারুল হক।
সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রামের জ্যেষ্ঠ জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ বশির আহমেদ।













Leave a Reply