রাজশাহীতে আর কোনো পুকুর ভরাট করা যাবে না বলে জানিয়েছেন রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার ড. অ. ন. ম. বজলুর রশীদ।
বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় ও স্মারকলিপি গ্রহণ অনুষ্ঠানে তিনি এ ঘোষণা দেন।
বিভাগীয় কমিশনার বলেন, ‘রাজশাহী একসময় ‘পুকুরের শহর’ হিসেবে পরিচিত ছিল। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বহু পুকুর দখল ও ভরাট হয়ে গেছে। আমরা ইতোমধ্যে এসব বিষয়ে কাজ শুরু করেছি। একটি ভরাট পুকুর পুনঃখননের কাজও শুরু হয়েছে। আমাদের পরিষ্কার সিদ্ধান্ত-রাজশাহীতে আর কোনো পুকুর ভরাট করা হবে না। নির্বাচনের পর যেসব পুকুর ভরাট হয়ে আছে, সেগুলো নিয়েও আমরা আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’
রাজশাহী নগরের চলমান উন্নয়নকাজে সৃষ্ট যানজট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘শহরের উন্নয়নকাজ একই সময়ে একাধিক স্থানে শুরু হওয়ায় মানুষের ভোগান্তি বেড়েছে। আমি প্রকৌশলীদের সঙ্গে বৈঠক করে নির্দেশনা দেব যে একসঙ্গে একাধিক কাজের বদলে একটির পর একটি কাজ শেষ করা হোক। এতে জনদুর্ভোগ কমবে।’
এছাড়া নগরীর সৌন্দর্য নষ্ট হওয়ায় তিনি সিটি করপোরেশনকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে গাছ লাগানোর নির্দেশ দিয়েছেন। ‘আমি বলেছি, আপনাদের কারণে যে ক্ষতি হয়েছে তা আপনাদেরই পুষিয়ে দিতে হবে। ৫০ মিটার এলাকায় ফুলের গাছ ও পরবর্তী ৫০ মিটারে বড় গাছ লাগাতে হবে।’
বিভাগীয় কমিশনার জানান, পদ্মা, শিব, বারনই, হুজা, মালঞ্চ, বড়াল, নারদসহ রাজশাহীর বহু নদী দখল ও ভরাট হয়ে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে। আপনারা সহযোগিতা করলে এসব নদী উদ্ধার করা সম্ভব। নদী রক্ষায় পানি সম্পদ উপদেষ্টার নেতৃত্বে দেশব্যাপী বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আট বিভাগে ১৩টি গুরুত্বপূর্ণ নদী চিহ্নিত করা হয়েছে, যার মধ্যে রাজশাহী বিভাগের ৪টি নদী আছে। রাজশাহী নগরীর উপকণ্ঠে বারনই নদীও এ তালিকায় আছে।’
অনুষ্ঠানের শেষে বাপা ও রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের পক্ষ থেকে বিভাগীয় কমিশনারকে একটি স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। স্মারকলিপিতে বলা হয়, পদ্মা তীরবর্তী রাজশাহী অঞ্চলের নদী, খাল ও জলাশয় অবৈধ দখল, দূষণ, অপরিকল্পিত উন্নয়ন ও নজরদারির অভাবে মৃতপ্রায় হয়ে পড়েছে। নাব্যতা কমে যাওয়ায় সাম্প্রতিক বর্ষণে জলাবদ্ধতা ও কৃষির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। গবেষণায় উঠে এসেছে-অতিরিক্ত ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন, নদীর প্রবাহ হ্রাস ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে পানির স্তর দ্রুত নেমে যাচ্ছে।
স্মারকলিপি প্রদানকালে উপস্থিত ছিলেন বাপা জাতীয় কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জামাত খান, আফজাল হোসেন, বাপা রাজশাহী জেলা সভাপতি প্রকৌশলী মাহমুদ হোসেন, সাধারণ সম্পাদক সেলিনা বেগম, সাংবাদিক আকবারুল হাসান মিল্লাত, শ. ম. সাজু প্রমুখ।














Leave a Reply