বৈশ্বিক তৈরি পোশাক রপ্তানিতে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশের স্থান ধরে রেখেছে বাংলাদেশ। তবে বিশ্ববাজারে দেশের অংশীদারিত্ব আগের বছরের তুলনায় কিছুটা কমেছে। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) মঙ্গলবার প্রকাশিত ‘বিশ্ব বাণিজ্য পরিসংখ্যান: ২০২৪ সালের মূল অন্তর্দৃষ্টি ও প্রবণতা’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।
প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২৪ সালে বাংলাদেশ ৩ হাজার ৮৪৮ কোটি মার্কিন ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করেছে, যা ২০২৩ সালের ৩ হাজার ৮৪০ কোটি ডলারের তুলনায় শূন্য দশমিক ২১ শতাংশ বেশি।
তবে, বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানির অংশীদারিত্ব আবার কমেছে। ২০২৪ সালে এই অংশীদারিত্ব দাঁড়িয়েছে ৬ দশমিক ৯ শতাংশে, যা ২০২৩ সালে ছিল ৭ দশমিক ৩৮ শতাংশ, ২০২২ সালে ৭ দশমিক ৮৭ শতাংশ এবং ২০২১ সালে ছিল ৬ দশমিক ৩৭ শতাংশ। বাংলাদেশ অ্যাপারেল এক্সচেঞ্জ কর্তৃক সংকলিত ডব্লিউটিও-র প্রতিবেদনে এই পরিসংখ্যান তুলে ধরা হয়।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য অনুযায়ীও, ২০২৪ সালে রপ্তানি আয় ছিল ৩ হাজার ৮৪৮ কোটি মার্কিন ডলার। সংস্থাটি অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) হালনাগাদকৃত চালানের তথ্য প্রতিফলন করায় ডব্লিউটিও-র তথ্যের সঙ্গে কোনো গরমিল পাওয়া যায়নি।
তৈরি পোশাকের প্রধান রপ্তানিকারকদের মধ্যে চীন বিশ্ববাজারে শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে। দেশটি ২৯ দশমিক ৬৪ শতাংশ বাজার অংশীদারিত্ব নিয়ে ২০২৪ সালে ১৬ হাজার ৫২৪ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে। বাংলাদেশের প্রধান প্রতিযোগী ভিয়েতনাম ৬ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ বাজার অংশীদারিত্ব নিয়ে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে; তাদের রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৩ হাজার ৩৯৪ কোটি ডলার।
ডব্লিউটিও-র তথ্য বলছে, তুরস্ক ১ হাজার ৭৯১ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি করে ৩ দশমিক ২১ শতাংশ অংশীদারিত্ব নিয়ে চতুর্থ এবং ভারত ১ হাজার ৬৩৬ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি করে ২ দশমিক ৯৪ শতাংশ অংশীদারিত্ব নিয়ে পঞ্চম স্থান অধিকার করেছে।
তৈরি পোশাকের প্রধান আমদানিকারকদের মধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়ন শীর্ষে রয়েছে। বিশ্ববাজারের ৩৪ দশমিক ৩ শতাংশ অংশীদারিত্ব নিয়ে তারা ২১ হাজার ১০০ কোটি ডলারের পোশাক আমদানি করেছে। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা যুক্তরাষ্ট্র ১৫ শতাংশ অংশীদারিত্ব নিয়ে ৯ হাজার ২০০ কোটি ডলারের পোশাক আমদানি করেছে।
এছাড়া, জাপান ৪ শতাংশ অংশীদারিত্ব নিয়ে ২ হাজার ৫০০ কোটি ডলার, যুক্তরাজ্য ৩ দশমিক ৪ শতাংশ অংশীদারিত্ব নিয়ে ২ হাজার ১০০ কোটি ডলার এবং দক্ষিণ কোরিয়া ২ দশমিক ১ শতাংশ অংশীদারিত্ব নিয়ে ১ হাজার ৩০০ কোটি ডলারের পোশাক আমদানি করেছে।
পণ্য বাণিজ্যের বিষয়ে ডব্লিউটিও-র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালে ২ শতাংশ হ্রাসের পর ২০২৪ সালে বিশ্বে পণ্য ও বাণিজ্যিক পরিষেবা বাণিজ্য ৪ শতাংশ বেড়ে ৩১ দশমিক ৫ ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। এর মধ্যে পণ্য বাণিজ্য ২ শতাংশ বেড়েছে, যেখানে পরিষেবা বাণিজ্য শক্তিশালীভাবে ৯ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, যা ২০২৩ সালের প্রবৃদ্ধিরই প্রতিফলন। বিশ্ব বাণিজ্যে পরিষেবার অংশীদারিত্ব বেড়ে ২৬ দশমিক ৪ শতাংশে দাঁড়িয়েছে, যা ২০০৫ সালের পর সর্বোচ্চ।
Leave a Reply