গণ–অভ্যুত্থানের পর জাতি, রাষ্ট্র পুনর্গঠনের যে আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়েছিল, সেটি এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্যই ঐকমত্য কমিশন গঠিত হয়েছিল। ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের রূপরেখা তৈরির চেষ্টায় রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যের মাধ্যমে জুলাই সনদ প্রণয়ন করা হয়েছে। কিন্তু জুলাই সনদে দলগুলোর নোট অব ডিসেন্ট (ভিন্নমত) থাকলেও সনদ বাস্তবায়নের খসড়ায় সেটি বাদ দেওয়া হয়েছে। এর ফলে রাজনৈতিক জটিলতা ও সংকট তৈরি হয়েছে।
যেসব দল বিভিন্ন সংস্কার প্রস্তাবে নোট অব ডিসেন্ট দিয়েছে, জুলাই সনদে তাদের অবস্থান কী হবে, সেটি নিয়ে জটিলতা দেখা দিয়েছে। নোট অব ডিসেন্ট তুলে দেওয়া সঠিক কাজ হয়নি। আবার একটা পর্যায়ে সরকারের দিক থেকে দলগুলোকে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্ত নিতে বলা হয়েছে। এখন ঐকমত্য কমিশন ক্রিয়াশীল নেই, সরকারের দিক থেকে কোনো উদ্যোগ নেই। তাহলে ফ্যাসিলিটেট করবে কে? গণতন্ত্র মঞ্চসহ ৯টি দল আলোচনার উদ্যোগ নিলেও ফ্যাসিলিটেটরের অভাবে সেটি সম্ভব হয়নি। সরকার যদি সনদ বাস্তবায়নের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়, সে ক্ষেত্রে জুলাই সনদ বিবেচনায় নিতে হবে। এমন কোনো অবস্থার সৃষ্টি করা যাবে না, যাতে সংস্কার, বিচার ও নির্বাচনে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়। এমনটি হলে রাজনীতিসহ সমাজজীবনে বিশৃঙ্খলা দেখা দেবে। এর সুযোগ গ্রহণ করবে পতিত ফ্যাসিস্ট এবং তাদের এ–দেশীয় পৃষ্ঠপোষকেরা। এ কারণে সব দলকে দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে।
সংস্কার বিষয়ে ন্যূনতম জাতীয় ঐক্য ছাড়া রাজনৈতিক সংকটের সমাধান হবে না। এটি সরকারকে বিবেচনায় নিতে হবে। সরকার পক্ষপাতমূলক সিদ্ধান্ত নিলে ঐকমত্যে ব্যাঘাত ঘটবে। জাতীয় নির্বাচন হওয়াটা অপরিহার্য, এর কোনো বিকল্প নেই। সরকার পক্ষপাতমূলক আচরণ করলে এবং ন্যূনতম জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠা না হলে নির্বাচন নিয়ে উদ্বেগ ও আশঙ্কা তৈরি হবে।
জোনায়েদ সাকি: প্রধান সমন্বয়কারী, গণসংহতি আন্দোলন
















Leave a Reply