ন্যাশনাল কংগ্রেস বাংলাদেশ-এনসিবির চেয়ারম্যান ও সাবেক ছাত্রনেতা কাজী ছাব্বীর বলেছেন, জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানের পক্ষের নিবন্ধিত-অনিবন্ধিত সব রাজনৈতিক শক্তির সম্পৃক্ততা ছাড়া ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ ও ‘জুলাই জাতীয় সনদ’ কোনোটিই টেকসই হবে না। তিনি বলেন ২৪-এর জুলাই মাত্র ছত্রিশ দিন আন্দোলনের ফসল নয়। দেশের মানুষের দীর্ঘ পনেরো বছরের পুঞ্জিভূত ক্ষোভের রক্তক্ষয়ী অর্জন হলো ছাত্রজনতার নেতৃত্বে ঐতিহাসিক জুলাই বিপ্লব।
ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা দুর্নীতি,গুম,খুন, ঘুষ,লুটপাট শাপলা চত্ত্বর হত্যাকাণ্ড, বিডিআর হত্যাকাণ্ড, ভোটের অধিকার ও স্বাধীন ভাবে কথা বলার অধিকার কেড়ে নিয়ে দেশকে এক নরকের রাজ্যে পরিণত করেছিলো। তাই আওয়ামিলীগের সকল প্রকার নৈরায্যের বিরুদ্ধে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের দীর্ঘদিনের আন্দোলন অবশেষে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখে ক্ষমতাকে আকড়ে ধরে রাখতে নির্বিচারে গুলি করে হাজার হাজার ছাত্র হত্যার কারণে সকল রাজনৈতিক দল এবং সাধারণ মানুষ কর্তৃক ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার পতনের এক দফা আন্দোলন শুরু হয়৷ গণ-আন্দোলনে তোপের মুখে সাড়ে তিনশো এমপি মন্ত্রীসহ শেখ হাসিনা পালিয়ে যায়। জুলাই আন্দোলনে দেশের সঙ্গীত শিল্পীগণ গানের মাধ্যমে এবং কবি সাহিত্যিকগণও ক্ষুরধার কবিতা লেখনির মাধ্যমে সোস্যাল মিডিয়ায় আন্দোলনকামীদের ব্যাপকভাবে উৎসাহ উদ্দীপনা ও সাহস জুগিয়ে উজ্জিবিত রেখেছেন বিভিন্ন ভাবে। এদের অবদানের কথা ঘোষণাপত্রে অন্তর্ভুক্ত না হওয়াটা বড়ই দু:খজনক। জুলাই ঘোষণাপত্রে শাপলা চত্ত্বর হত্যাকাণ্ড, বিডিআর হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি যুক্ত হবে বলে সাধারণ মানুষের ধারণা ছিল কিন্তু তাহা হয়নি।

ন্যাশনাল কংগ্রেস বাংলাদেশ- এনসিবি’র ১১তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে প্রেসিডিয়াম কমিটির এক সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
এনসিবি’র প্রেসিডিয়াম সদস্যগণ আরো বলেন, দীর্ঘ সাড়ে ১৫ বছরের স্বৈরাচারী অপশাসনের বিরুদ্ধে সম্মিলিত বিস্ফোরণ ছিল জুলাই গণঅভ্যুত্থান। অভ্যুত্থানের মূল লক্ষ্যই ছিল একটি বৈষম্যহীন নতুন রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা। এজন্য প্রায় দেড় হাজার মানুষ প্রাণ দিয়েছেন এবং প্রায় ৩০ হাজার মানুষ পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন। দুঃখজনক হলো— ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ ও ‘জুলাই জাতীয় সনদ’ প্রণয়নের মতো বিষয়ে প্রগতিশীল রাজনৈতিক দল এনসিবিসহ অভ্যুত্থানের পক্ষের কয়েকটি দলকে সম্পৃক্ত করা হয়নি। এর মাধ্যমে অভ্যুত্থানের পক্ষের শক্তিগুলোর মধ্যে ঐক্যের পরিবর্তে বৈষম্য ও অনৈক্য সৃষ্টি করা হয়েছে। এ বিষয়ে সরকার ও ঐকমত্য কমিশনকে জরুরি ভিত্তিতে দৃষ্টি দেওয়া উচিত।
এনসিবি’র চেয়ারম্যান কাজী ছাব্বীর এর সভাপতিত্বে ও মহাসচিব ইকবাল হাসান স্বপনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় এনসিবি’র প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার আনোয়ার পারভেজ, মো: ফারুক মিয়া, সেলিম পারভেজ, সানজিদা রসুল, আবুল বাশার, মহিন উদ্দিন, জিএসএম সেলিম রেজা, হাজী এম.এ বাশার এবং সৈয়দ তৌফিক কামাল আলোচনায় অংশ নেন।
Leave a Reply