গাজার উপত্যকায় ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর সর্বশেষ হামলায় নিহত হয়েছেন অন্তত ৮৩ জন ফিলিস্তিনি এবং আহত হয়েছেন আরও অন্তত ৫৫৪ জন। গতকাল সন্ধ্যায় এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজায় সামরিক অভিযান চালিয়ে আসছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, সর্বশেষ এই হামলার পর সেখানে মোট নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬০ হাজার ৩৩২ জনে এবং আহত হয়েছেন ১ লাখ ৪৭ হাজার ৬৪৩ জন ফিলিস্তিনি।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, দখলদার বাহিনীর বোমার শিকার হয়ে বহু মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়ে আছেন। উদ্ধার কার্যক্রম চালানোর মতো পর্যাপ্ত যন্ত্রপাতি ও লোকবল না থাকায় তাদের উদ্ধার করা সম্ভব হচ্ছে না।
বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়, ইসরায়েলি বাহিনী মানবিক ত্রাণ নিতে আসা ফিলিস্তিনিদের ওপরও হামলা চালাচ্ছে। গতকাল গাজার বিভিন্ন এলাকায় ত্রাণ সংগ্রহ করতে গিয়ে ইসরায়েলি গোলার আঘাতে প্রাণ হারিয়েছেন ৫৩ জন ফিলিস্তিনি এবং আহত হয়েছেন আরও অন্তত ৪০০ জন।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গাজা নিয়ন্ত্রণকারী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে ঢুকে আকস্মিক হামলা চালায়। এতে ১,২০০ জন নিহত হন এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যাওয়া হয়। এর প্রতিক্রিয়ায় সেদিন থেকেই গাজায় ব্যাপক সামরিক অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)।
১৫ মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা এই অভিযানের মধ্যেই আন্তর্জাতিক চাপের মুখে ২০২৫ সালের ১৯ জানুয়ারি সাময়িক যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে ইসরায়েল। তবে যুদ্ধবিরতির দুই মাস না যেতেই, ১৮ মার্চ থেকে আবারও শুরু হয় দ্বিতীয় দফার অভিযান।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, এই দ্বিতীয় পর্যায়ের অভিযানে গত চার মাসে ৯ হাজার ১৬৩ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন প্রায় ৩৫ হাজার ৬০২ জন।
হামাসের হাতে আটক ২৫১ জন জিম্মির মধ্যে এখনো অন্তত ৩৫ জন জীবিত রয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। আইডিএফ জানিয়েছে, তারা সামরিক অভিযান চালিয়ে জিম্মিদের উদ্ধারে কাজ করছে।
জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বারবার গাজায় হামলা বন্ধের আহ্বান জানালেও ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, হামাসকে সম্পূর্ণ ধ্বংস এবং জিম্মিদের মুক্ত করা পর্যন্ত এই অভিযান চলবে।
এদিকে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালত আইসিজেতে গণহত্যার অভিযোগে মামলা চলমান রয়েছে।
Leave a Reply