গাইবান্ধায় ‘চোর’ সন্দেহে ‘মানসিক ভারসাম্যহীন’ ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার তিস্তার দুর্গম চরাঞ্চলে ‘গরু চোর’ সন্দেহে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা করেছে স্থানীয়রা। ঘটনার পর এক নারীকে আটক করেছে পুলিশ। তবে নিহতের স্বজনরা ওই ব্যক্তিকে ‘মানসিক ভারসাম্যহীন’ উল্লেখ করে ‘পরিকল্পিতভাবে’ তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে পুলিশের কাছে দাবি করেছেন।

গতকাল ভোরে উপজেলার বেলকা ইউনিয়নের বেলকা নবাবগঞ্জ গ্রামে এ ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন সুন্দরগঞ্জ থানার ওসি আব্দুল হাকিম আজাদ। নিহত আব্দুস সালাম (৫০) একই ইউনিয়নের রামডাকুয়া গ্রামের ওমেদ আলীর ছেলে। স্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন আব্দুস সালাম তিন ছেলেকে নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে মানবেতর জীবন যাপন করছিলেন।

ঘটনার পর থেকে পলাতক নবাবগঞ্জ গ্রামের আব্দুল গণি মিয়ার অভিযোগ, গতকাল শুক্রবার রাত ২টার দিকে আব্দুস সালাম তার বাড়ির গোয়ালঘরে প্রবেশ করেন। অজ্ঞাত স্থান থেকে মোবাইলে আব্দুল গণি বলেন, কয়েকদিন আগে তার একটি শ্যালো মেশিন চুরি হয়ে গিয়েছিল। পরে শনিবার (১ নভেম্বর) রাতে আ. সালামকে তার গোয়াল ঘরে দেখে তিনি প্রতিবেশীদের খবর দেন। পরে তারা এসে সালামকে মারধর করে।

নিহতের স্বজনরা বলেন, সম্প্রতি আব্দুস সালাম মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েন। তারপর থেকে মানুষের দান খয়রাতে তিনি ছেলেদের নিয়ে জীবন যাপন করতেন। বাবাকে হারিয়ে তিনটি ছোট ছেলে এখন চরম অসহায় হয়ে পড়েছে। স্বজনদের দাবি আব্দুস সালামের বিরুদ্ধে আগে কখনোই চুরির অভিযোগ ওঠেনি। পরিকল্পিতভাবে নির্যাতন করে তাকে হত্যা করা হয়েছে।

সুন্দরগঞ্জ থানার ওসি আব্দুল হাকিম আজাদ বলেন, বেধড়ক মারপিটের একপর্যায়ে অচেতন হয়ে পড়লে সালামকে বাড়ির অদূরে পুকুরপাড়ে ফেলে রাখা হয়। সেখানেই তিনি মারা যান। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। এ ঘটনায় আব্দুল গণি মিয়ার স্ত্রী দুলালী বেগমকে (৪৩) আটক করা হয়েছে।

গাইবান্ধার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিদ্রোহ কুমার কুন্ড জানান, স্বজনদের দাবি নিহত ব্যক্তি মানসিকভাবে অসুস্থ ছিলেন। এ হত্যাকাণ্ডে আর কারা জড়িত ছিল, তাদেরকে শনাক্তে তদন্ত অব্যাহত আছে। তদন্ত সাপেক্ষে দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *